ককপিট
  • প্রচ্ছদ
  • শিল্প
    • আলোকচিত্র
    • চলচ্চিত্র
    • চিত্রকলা
    • সংগীত
    • স্থাপত্য
    • নাট্যতত্ত্ব
  • সাহিত্য
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • গল্প
    • উপন্যাস
    • মুক্তগদ্য
  • চিন্তা
    • সমাজ
    • রাষ্ট্র
    • দর্শন
    • ইতিহাস
    • বিজ্ঞান
  • আলোচনা
    • বই
    • লিটলম্যাগ
    • ওয়েবজিন
    • গণমাধ্যম
  • অনুবাদ
    • অনুবাদ প্রবন্ধ
    • অনুবাদ কবিতা
    • অনুবাদ গল্প
    • অনুবাদ উপন্যাস
  • সাক্ষাৎকার
  • ভূলোক
  • লোকসংস্কৃতি
  • ভ্রমণ
  • কার্টুন
  • ই-ম্যাগ
  • টিভি
No Result
View All Result
Bengali BN English EN
ককপিট
  • প্রচ্ছদ
  • শিল্প
    • আলোকচিত্র
    • চলচ্চিত্র
    • চিত্রকলা
    • সংগীত
    • স্থাপত্য
    • নাট্যতত্ত্ব
  • সাহিত্য
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • গল্প
    • উপন্যাস
    • মুক্তগদ্য
  • চিন্তা
    • সমাজ
    • রাষ্ট্র
    • দর্শন
    • ইতিহাস
    • বিজ্ঞান
  • আলোচনা
    • বই
    • লিটলম্যাগ
    • ওয়েবজিন
    • গণমাধ্যম
  • অনুবাদ
    • অনুবাদ প্রবন্ধ
    • অনুবাদ কবিতা
    • অনুবাদ গল্প
    • অনুবাদ উপন্যাস
  • সাক্ষাৎকার
  • ভূলোক
  • লোকসংস্কৃতি
  • ভ্রমণ
  • কার্টুন
  • ই-ম্যাগ
  • টিভি
No Result
View All Result
Bengali BN English EN
ককপিট
No Result
View All Result
প্রচ্ছদ আলোচনা

কবিতায় সময়ের স্বর

দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর

ফরিদ ছিফাতুল্লাহ by ফরিদ ছিফাতুল্লাহ
জুন ১, ২০২২
in আলোচনা, বই
0 0
0
কবিতায় সময়ের স্বর
0
SHARES
19
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

আমরা শুনে থাকি কবিতা, চিত্রকলা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, নৃত্যকলা বা সংগীত—শিল্পকলার সকল মাধ্যমই মানবজীবনের আনন্দ বেদনার আখ্যান রচনা করে। মানুষের একই শিল্পচৈতন্য থেকে উৎসারিত হয় শিল্পকলার সকল শাখা—প্রশাখা। একটি কবিতায় যা বলা যায় তা একটি চিত্রকলাতেও মূর্ত করা যায়। নাটকের একটি সংলাপও কবিতাতুল্য হয়ে উঠতে পারে। একটি ছোটগল্পেও কবিতা থাকতে পারে। আবার একটি কবিতাতেও জীবনের সুগভীর গল্প বিধৃত হতে পারে।

জীবনানন্দ একবার বলেছিলেন— ‘কবিতা সম্বন্ধে বড়, সত্যার্থী আলোচনা কবিদেরই করা উচিত।’ তাই কোন কবির কবিতা নিয়ে আলোচনা করবার আগে আলোচক কতটা কবি সেটিও ভেবে নেওয়া দরকার। বিশ্বজুড়ে সাহিত্যের সবচেয়ে বিকশিত ও বিতর্কিত শাখা বোধহয় কবিতা। কবিতার সংজ্ঞা ও স্বরূপ, আকার ও আকৃতি বা আঙ্গিক ও প্রকরণ নিয়ে বিচিত্র সব আলোচনা আমরা দেখতে পাই। কেউ একজন একটি কবিতাকে শ্রেষ্ঠতম কবিতা বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, আবার কেউ হয়তো সেই কবিতাটিকেই কোন কবিতাই হয়নি বলে রায় দিয়ে দিচ্ছেন। জীবদ্দশায় জীবনানন্দকে কতই না তুচ্ছতাচ্ছিল্যের শিকার হতে হয়েছে! কত মন্দ বাক্য প্রয়োগ করা হয়েছিলো তাঁর সম্পর্কে! অথচ আজ কোথায় সেই সমালোচকেরা আর কোথায় জীবনানন্দ! সমালোচকদের কাউকে সময় মনে রাখেনি। মনে রেখেছে জীবনানন্দকে।

কবি হয়ে ওঠার সাথে অন্য কবির কবিতা নিয়ে আলোচনার যে যোগসূত্রের কথা জীবনানন্দ বলে গেছেন কবি মারজুক রাসেলের কবিতা নিয়ে দুচার কথা বলবার আগে সেটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। কেননা কবি না হয়েও কবিতার আলোচনা করবার উদ্যোগ দুঃসাহস ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। হয়তো দেখা যাবে কোন সফল সার্থক কবিতাংশ সম্পর্কে অর্বাচিনের মতো মন্তব্য করে ফেলেছি বা দুর্বল কোন কবিতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করছি। যাই হোক না কেন এটা তো সত্য যে একটি কবিতার নানামুখী অর্থব্যঞ্জনা থাকে, থাকে একই অঙ্গে নানা রূপ, থাকে নানা মাত্রিক শিল্প সৌকর্য। আধুনিক কবিতার শিল্পচেতনা ও শিল্পভাবনা এতটাই সুগভীর ও নানামাত্রিক যে অসংখ্যবার পাঠেও একটি কবিতার শিল্প সৌকর্যের সকল দিক আবিষ্কার প্রায় অসম্ভব। একই কবিতা একেক পাঠককে একেকভাবে আলোড়িত করতে পারে। একই কবিতা একেক পাঠকের কাছে একেক অর্থ ব্যঞ্জনা, একেক দৃশ্যকল্প নির্মাণ করতে পারে। একই কবিতা ভিন্ন ভিন্ন পাঠকের ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতির দ্বারোদঘাটন করতে পারে। সুতরাং কবি মারজুক রাসেলের কবিতা সম্পর্কে আমি একান্তই আমার নিজের অনুভূতি ও বোধের কথাই বলছি এখানে। তাই এইসব মতামতের সাথে যে কারো দ্বিমত করবার অবকাশ রয়ে গেল।

কবি মারজুক রাসেল এদেশের শিল্পাঙ্গনের খুব পরিচিত মুখ। নানা কারণে তিনি পরিচিত এবং আলোচিত। কবিতা লিখছেন দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে। ইতোপূর্বে তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থগুলি হলো— ‘শান্টিং ছাড়া সংযোগ নিষিদ্ধ’ (২০০০), ‘চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো’ (২০০১), ‘বাইজিবাড়ি রোড’ (২০০২), ‘ছোট্ট কোথায় টেনিসবল’ (২০০৫) এবং ২০২০ অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বেরিয়েছে তাঁর নির্বাচিত কবিতার বই— ‘দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর’। যেটি বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রিত কবিতার বই। কবি এই বইয়ের শিরোনামের নিচে ছোট্ট করে ব্রাকেটে লিখেছেন ‘গ—নির্বাচিত কবিতা’ এবং এবিষয়ে গ্রন্থের শুরুতে ছোট্ট একটি ভূমিকাও জুড়ে দিয়েছেন।

মারজুক রাসেলের কবিতায় সময়ের চিহ্নাদি যেভাবে জায়গা পেয়েছে ওভাবে এই সময়ের অন্য কারো কবিতায় বোধ করি জায়গা পায়নি। সময়ের স্বরকে কবিতায় ধরতে গিয়ে মারজুক রাসেল যেটি করেন সেটি হলো– যতটা সম্ভব কম বিকৃত করে তা কবিতায় তুলে ধরা। এই সময়ের অন্য কবিরা সময়ের চিহ্নাদির গায়ে প্রচল শিল্পের পরিশীলিত পোশাক পরিয়ে, স্নান করিয়ে তাঁদের কবিতায় স্থান দেন, সেখানে মারজুক সেসব সময়—চিহ্নাদিকে তাঁর কবিতায় তুলে এনেছেন একদম র ,একদম অবিকৃত অবস্থায়। সেসবের রূপ, গন্ধ, আকার—সাকার কোন কিছুরই পরিশীলন ঘটাননি। সেসব বিষয়—আশয়, ভাষা, সংলাপের গায়ে ধুলো থাকলে সেই ধুলো, কাদা থাকলে কাদা, দুর্গন্ধ থাকলে সেই দুর্গন্ধ নিয়েই স্থানিত হয়েছে মারজুকের কবিতায়। এটি করতে গিয়েই মারজুকের কবিতা শিকার হয়েছে নানান সমালোচনার। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন নতুন শিল্পরীতিই সমালোচনা এড়িয়ে যেতে পারেনি। মারজুক রাসেলের কবিতার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে।

কবি মারজুক রাসেল নিজস্ব কবিতাভাবনার ব্যাপারে পুরোপুরি দ্বিধাহীন। তিনি বলছেন—’ইশকুল নিজেই পড়তে আসে আমাদের বাড়ি, আমার কাছে।’ এই একটি ছত্রেই নিজের কবিতারীতির বিষয়ে মারজুকের দ্বিধাহীন নিঃসংশয় বিশ্বাসের দৃঢ়তা প্রকাশিত হয়েছে।

  মারজুক রাসেলের কবিতা সম্পর্কে এইমাত্র যা বলা হলো, তার সত্যাসত্য যাচাইয়ের জন্য কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেয়া যাক এবার—

১.

 দেহ বেড়ে গেছে, দেহ নেমে গেছে জলের কিনারে,

সবটা শুকনো,কেবল ভিজছে চুল—

মেয়েরাও বাজারে আসে,

মেয়েরাও কিনে নিয়ে যায় ছুরি ও তেঁতুল।

২.

ফাড়া আমার সামনে কেন,পিছনে—ডাইনে—বামে—উপরে—নিচে… সব জায়গায়

থাকুক; তোর কী ল্যাওড়া? আমি গেলাম!

৩.

তোমার দেখা পাচ্ছি না; তোমাদের দেড়—তলা বাড়িটাকে দেখতেছি। বাদামি পর্দা—ওড়া—হালকা—খোলা জানালা দিয়ে যত ভিতর দেখা যায়, ছাদে শুকাতে দেয়া কাপড়চোপড়, ‘ফিরোজা+পিংক’— কম্বিনেশন ড্রেসে তোমাকে একদিন মার্কেটে দেখছিলাম; ওই ড্রেসটা কি ভিজাই থাকে, শুকাইতে দাও না, ছায়াতে শুকাও? গোপনে শুকাও?

তোমার এলাকার হোটেলগুলায় নাশতা; দুপুর, রাতের খাবার, টং—দোকানের চিনি—ছাড়া—কাঁচাপাতি—দুধ—বেশি চা; চানাচুর,আপঝাপ, মিনারেল পানি, চুইংগাম, ক্র্যাকজ্যাক, খাচ্ছি প্রশংসা  করছি। তোমারে খাইতে পারতেছি না।

তোমার এলাকার রোদ, বৃষ্টি, ধুলাবালি, প্যাঁক, ময়লা—টয়লা লাগায় বেড়াচ্ছি; তোমারে লাগানো হয়েই উঠতেছে না, হবে….

তোমার এলাকা ছাইড়া যাচ্ছি;
তোমারে ছাড়ার ফিলিংস হচ্ছে, হোক—
আমি অনেক—কিছুই—ছাইড়া—আসা—লোক।

অনেকে সংশয় প্রকাশ করে বলছেন— এটিকে যথার্থ কবিতা বলা যায় কি না। অনেকে বলছেন—এটি অশ্লীল কবিতা। এস্টাবলিশমেন্টের অনুগত প্রোটোটাইপ কবিতা—লেখক বা পাঠকদের পক্ষেই কেবল এই কবিতার এরকম সমালোচনা সম্ভব। সময়ের ভাষ্য ধারণ করা এই কবিতাটি কবিতা হয়ে ওঠার সকল বৈশিষ্ট্যে বিশিষ্ট। ছন্দ, আঙ্গিক, শিল্প সৌকর্য, ইঙ্গিতময়তা সকল দিক থেকেই এটি একটি চমৎকার কবিতা। তবু কেন এটিকে কবিতা বলে স্বীকার না করার প্রবণতা? কারণ— এস্টাবলিশমেন্টের বিরোধীতা করতে না পারা। আউট অব দ্য বক্স চিন্তা করতে পারার অক্ষমতা। নতুন—পুরাতনের চিরকালের দ্বন্দ্ব। সময়ের সাথে নিজেকে গতিশীল রাখতে না পারা। তাই সহজেই এই কবিতার সমালোচনাকে প্রগতি—বিরোধীতা বলে অভিহিত করা যেতে পারে।

ভাষা ও সাহিত্যের ক্রমবিকাশের ইতিহাস আমাদের কী বলে? আমাদের প্রাচীনতম চর্যাপদের কাব্যকলা কি ভাব—ভাষা, উপমা—উৎপ্রেক্ষা, বিষয়—আশয়ে মধ্যযুগীয় কাব্যকলা থেকে ভিন্ন নয়? আবার মধ্যযুগীয় শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বা পদাবলী থেকে আধুনিক যুগের কাব্যকলা কি সকল বৈশিষ্ট্যে ভিন্নভাবে বিশিষ্ট নয়? ভাষা ও সাহিত্য তো নদীর স্রোতের মতো কাল প্রবাহের সাথে গতিশীল। সময় তার পদচিহ্ন রেখে যায় ভাষায়, সাহিত্যে। জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, রাজনীতি, দর্শন আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে চলেছে। পাল্টে দিচ্ছে আমাদের জীবনযাপন। আমাদের ঘুমোবার ধরন, ঘুমোবার উপকরণ, খানা—খাদ্য, হাঁটা—চলা, প্রেম, যৌনতা সব কিছুতেই আসছে পরিবর্তন। আসছে নতুন চিন্তা। আজকের সময়ের কবিতায় এই পরিবর্তন বা নতুন চিন্তা, নতুন বস্তু নিচয়, প্রপস,, নতুন নতুন প্রকাশভঙ্গীর আগমন কি আমরা ঠেকিয়ে রাখতে পারব? নাকি ঠেকাবার চেষ্টা করা উচিত?

প্রসঙ্গক্রমে আরেকটি কবিতার কথা উল্লেখ করছি—

টিভি না হলে
দেখতে পেতাম না
কভার ড্রাইভের পর
বিরাট কোহলির ব্যাট কেমন দুলে ওঠে
—তপেশ দাশগুপ্ত: স্লো মোশন রিপ্লে

এই কবিতাটিও আমাদের সময়কে ধারণ করেছে। কিন্তু এটি নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য হবে না বলে ধরে নেয়া যায়। কেন? কারণ এটি তথাকথিত ‘অশ্লীল’ নয়। এখানেই আমাদের অনেকের চিন্তার অনগ্রসরতা। আমাদের কেউ কেউ ভাবতেই পারেন না— জগতে অশ্লীলতা বলে কিছু নেই। আর যদি অশ্লীল বলে কিছু থেকেও থাকে তা হলো— মানুষের জন্য যা কিছু অকল্যাণকর, জুলুম, নিপীড়ন, অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি। যৌনতা কিছুতেই অশ্লীলতা হতে পারে না। যৌনতাকে যদি অশ্লীলতা মনে করি তাহলে ভাত খাওয়াকেও অশ্লীলতা বলতে হবে। ফ্রয়েড মনে করতেন যৌনতাই মানুষের জীবনের চালিকাশক্তি। সুতরাং একে লুকিয়ে কোন ফায়দা নেই। বরং এর বহুমাত্রিক প্রকাশ প্রয়োজন। প্রয়োজন এর সকলমত্রিক বহুল চর্চার। কিছুতে আলো ফেললেই তার সবটা দেখা যায়। ময়লাটাও, সৌন্দর্যটাও। আজকের জগতের সিংহভাগ অনাচারের পেছনে আছে যৌন অবদমন। যৌন অবদমন নানাভাবে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে ফুটে ওঠে যা তার অযৌন কর্মকাণ্ডেও প্রভাব ফেলে। ব্যক্তির উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। সমাজের সাথে তার মিথস্ক্রিয়ার উপর অভিঘাত সৃষ্টি করে।

মারজুক রাসেলের কবিতার ‘তোমারে লাগানো হয়েই উঠতেছে না’ লাইনটায় কি আপত্তি আপনার? সেক্স করা অর্থে ‘লাগানো’ কি আমরা কথ্য ভাষায় ব্যবহার করি না? আর যদি আপনি ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’ বুঝাতে কোন বাংলা শব্দ ব্যবহার করতে চান তাহলে কোন শব্দটি বেছে নেবেন? ‘যৌন মিলন’ নাকি ‘রতিক্রিয়া’? গুরুগম্ভীর কোন প্রবন্ধ যা কোন পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হবে সেখানে হয়তো আপনি ‘যৌন মিলন’ বা ‘রতিক্রিয়া’ ব্যবহার করবেন। কিন্তু আমাদের প্রতিদিনের জীবনে কথ্য ভাষায় এই শব্দগুলি কি ব্যবহার করি? করি না। তাহলে সাহিত্যে এই কথ্যশব্দ কেন ব্যবহৃত হবে না? সাহিত্য তো সময়ের ভাষ্য। সমকালে ব্যবহৃত শব্দ এড়িয়ে আপনি সময়কে ধারণ করতে পারবেন কীভাবে? ভাষার দেহ শব্দ দিয়ে গড়া। আর শব্দগুলিই সময়কে ধারণ করে। আর যদি আপনি কবিতায় কথ্য ভাষার আটপৌরে শব্দ ব্যবহারের বিরোধিতা করেন তাহলে আপনি চলে গেলেন প্রাচীন সেই যুগে যে যুগে মানুষের মুখের ভাষা আর বইয়ের ভাষা ছিলো পৃথক। শুধু তাই নয়— বড়ো কবিদের অসংখ্য ভালো কবিতাকেই আপনাকে ফেলে দিতে হবে যা আপনি ফেললেও পৃথিবী ফেলবে না।

ভাষার শুদ্ধাশুদ্ধ রক্ষা করার চেষ্টাও একটি অপ্রগতিশীল ব্যাপার। কেননা ভাষার শুদ্ধাশুদ্ধ ইতিহাসে কেউ ধরে রাখতে পারেনি। আমরাও পারব না। ভাষা প্রবহমান নদীর মতো। নানা স্রোত এতে মেশে। বিভিন্ন সময়ের নুড়িপাথর, বালুকণা, রং, রূপ এই ভাষা— নদী বুকে করে প্রবাহিত হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে। তাই জিওফ্রে চসারের সময়ের ইংরেজি আর আজকের ইংরেজি, চর্যাপদের বাংলা আর আজকের বাংলার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। কলকাতার রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ রেস্তোরাঁর বিক্রয়কর্মীও ক্রেতাদের বলছে— ‘এখানে ভেজ/ নন ভেজ পাওয়া যায়’। বাংলা ভাষায় কি ‘ভেজ’ শব্দটির প্রবেশ রুদ্ধ করা গেল?

তবে কথা হলো ইংরেজি, হিন্দি থেকে যে পরিমাণ শব্দ বাংলায় প্রবেশ করছে সেই পরিমাণ শব্দ কি বাংলা থেকে হিন্দিতে বা ইংরেজিতে প্রবেশ করছে? সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও অনুমান করা যায় যে বাংলা থেকে সেই পরিমাণ শব্দ ঐ ভাষা দুটিতে যাচ্ছে না। এর কারণ— মার্ক্স বলে গেছেন। অর্থনীতি মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরাশক্তিগুলির উপর দুর্বল রাষ্ট্র ও সমাজগুলির যে নির্ভরতা, যে মুখাপেক্ষীতা, যে নতজানুতা সেটাই এই পথ সৃষ্টি করে দেয় যার ফলে উজানে থাকা ভাষার শব্দগুলি ভাটির ভাষায় প্রবেশ করতে থাকে অবাধে। ভাষা—নদীর এই স্রোতকে উল্টো দিকে প্রবাহিত করতে হলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে ক্ষমতাশালী হওয়া দরকার। দরকার উজানে বসবাস। তা না করে শুধু পৈতেওয়ালা ব্রাহ্মণ বা টুপিওয়ালা মৌলভীর মতো জাত গেল জাত গেল বলে চেঁচিয়ে কোন লাভ নেই।

আমি অবশ্য সকল প্রকার আধিপত্যবাদের বিরোধী। পরাশক্তি বা দুর্বল শক্তি ইত্যাদি বৈষম্যের বিরোধী। এমনকি ভৌগলিক বা ভাষাগত জাতীয়তাবাদেরও বিরোধী। আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর সকল ভাষাই আমার ভাষা, পৃথিবীর সকল ধর্মই আমার ধর্ম, পৃথিবীর সকল মানুষই আমার ভাই। দেশ—কাল—ধর্ম—ভাষার সীমারেখাগুলো অস্বীকার করতে পারলে যে সাম্য প্রতিষ্ঠা পায় তাই আমার কাম্য। এই একীভূত পৃথিবীতে তাই ‘অনুপ্রবেশ’ ‘আধিপত্য’ বলে কিছু থাকবে না। একটা বাড়িতে যেমন অনেকগুলো ঘর থাকে, একটা বাবা—মায়ের, একটা ভাইয়ের, একটা বোনের, একটা চাচার, একটা দাদুর। বাড়ির বাসিন্দাদের সবারই সব ঘরে প্রবেশাধিকার থাকে। এই আন্তর্জাতিকতাই আমার ধর্ম। এই সমকালীনতাই আমার কর্ম।

ট্যাগ: কবিতার বইফরিদ ছিফাতুল্লাহমারজুক রাসেল
ফরিদ ছিফাতুল্লাহ

ফরিদ ছিফাতুল্লাহ

কবি ও লেখক। বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের বিপণন এবং বিক্রয় বিভাগে কর্মরত আছেন। পেশাগত কর্মব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে লেখালেখি করেন। মানুষের সাথে জীবন ও জগত সম্পর্কে নিজের ভাবনা বিনিময়ের মাধ্যম মনে করেন লেখালেখিকে। ‘কবি’পদবাচ্যে নয় কবিতাকর্মী ভাবেন নিজেকে। মর্ত্যজীবনে বিশ্বাসী এই কবির কাব্যগ্রন্থ ‘রোদ বুনি ছায়াপথেবেরি’ বেরিয়েছে বইমেলায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

গোলাপফল
আলোচনা

বাংলাদেশের লিটলম্যাগ

জুন ২, ২০২২
অন্তর্চক্ষু খুলে দেওয়া বই
আলোচনা

অন্তর্চক্ষু খুলে দেওয়া বই

জুন ২, ২০২২
আমি যে মরি না তাই
আলোচনা

আমি যে মরি না তাই

জুন ১, ২০২২
ককপিট

ককপিট সৃজন ও বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার কাগজ। বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মুক্তবুদ্ধির চর্চায় শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি ও চিন্তার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে এর আত্মপ্রকাশ। প্রগতিশীল ও বিজ্ঞানমনস্ক পাঠক তৈরিতে প্রগতিবাদী লেখকদের লেখার পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রচারে ককপিটের তৎপরতা জারি থাকবে।

সাম্প্রতিক

  • মেনান্দার: ইন্দো-গ্রিক সাম্রাজ্যের সফল এক স্থপতি জুন ১৭, ২০২২
  • বিদ্রোহের ইতিহাসে ফকির মজনু শাহ জুন ১৭, ২০২২
  • মধ্যযুগে বাংলার গ্রামের জনজীবন জুন ১৭, ২০২২
  • আমরা
  • যোগাযোগ
  • লেখা পাঠান
  • লেখক
Cockpit-ককপিট

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ – ককপিট.কম

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • শিল্প
    • আলোকচিত্র
    • চলচ্চিত্র
    • চিত্রকলা
    • সংগীত
    • স্থাপত্য
    • নাট্যতত্ত্ব
  • সাহিত্য
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • গল্প
    • উপন্যাস
    • মুক্তগদ্য
  • চিন্তা
    • সমাজ
    • রাষ্ট্র
    • দর্শন
    • ইতিহাস
    • বিজ্ঞান
  • আলোচনা
    • বই
    • লিটলম্যাগ
    • ওয়েবজিন
    • গণমাধ্যম
  • অনুবাদ
    • অনুবাদ প্রবন্ধ
    • অনুবাদ কবিতা
    • অনুবাদ গল্প
    • অনুবাদ উপন্যাস
  • সাক্ষাৎকার
  • ভূলোক
  • লোকসংস্কৃতি
  • ভ্রমণ
  • কার্টুন
  • ই-ম্যাগ
  • টিভি

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ – ককপিট.কম

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password? Sign Up

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?